*আলিপুর টেলিকম ফ্যাক্টরিতে বিক্ষোভ সমাবেশ*।
আলিপুর টেলিকম ফ্যাক্টরিতে আজ ফ্যাক্টরি বিক্রি ও কর্মচারীদের নিয়ম বহির্ভূত বদলির প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। প্রচন্ড দাবদাহের মধ্যে ভাল সংখ্যক নিয়মিত, অনিয়মিত ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীরা এই কর্মসূচীতে সমবেত হয়েছিলেন। সভায় আলিপুর, গোপালপুর, খড়গপুরের টেলিকম ফ্যাক্টরিগুলি বর্তমান পরিস্থিতি ও কর্মচারীদের ওপর আক্রমণ সম্পর্কে বিস্তারিত বক্তব্য রাখেন কমরেড ওম প্রকাশ সিং। এরপর বক্তব্য রাখেন পশ্চিমবঙ্গ সার্কেলের সম্পাদক কমরেড সুজয় সরকার। তিনি বলেন সরকারের নীতি হল ফ্যাক্টরিগুলি বিক্রি করা সাথে সাথে সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলি বেসরকারী কোম্পানিগুলিকে হস্তান্তর করা। যদি কর্মচারীদের নিয়ম বহির্ভূত বদলি করা হলে তার বিরুদ্ধে সারা পশ্চিমবঙ্গ সার্কেলে ঐক্যবদ্ধ লড়াই সংগঠিত হবে। আগামী দশ ও এগার জুন CWC মিটিং-এ এই আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। এরপর বক্তব্য রাখেন বিএসএনএল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন-এর সভাপতি কমরেড অনিমেষ মিত্র। ফ্যাক্টরির ওপর আক্রমণ কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। সরকারের নীতিই এর কারণ। গত আর্থিক বছর থেকে বিএসএনএল-এর আয় বেড়েছে 800 কোটি টাকা অর্থাৎ 4%। মন্ত্রী পার্লামেন্টে বলছে বিএসএনএল-এর আয় বেড়েছে, আবার যখন কর্মচারীদের ওয়েজ রিভিশনের দাবি করলে সিএমডি বলেন গতবারের থেকে এবারে লোকসান বেড়েছে 1000 কোটি টাকা। আলিপুর টেলিকম ফ্যাক্টরির অভ্যন্তরে বহিরাগত এলে সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদ করতে হবে। আজ পিজিএম-এর কাছে দাবি সম্বলিত মেমোরেনডাম সাবমিট করা হবে। ইউনিয়নের সাথে আলোচনা করে সমস্যাগুলির সমাধান না হলে আরও বড় আকারের আন্দোলন হবে। নন-এক্সিকিউটিভ কর্মচারীরা আগামী সাতই জুলাই দিল্লি যাবে। যাতে কর্মচারীরা দিল্লি গিয়ে সরকার ও ম্যানেজমেন্টের নীতির বিরুদ্ধে সমাবেশ না করতে পারে তার জন্য ম্যানেজমেন্ট ছুটি মঞ্জুর না করার আদেশ জারি করেছে। আমরাও সিদ্ধান্ত নিয়েছি বেতন কাটে কাটুক দিল্লি আমরা যাবই। এরপর কমরেড অনিমেষ মিত্র ও কমরেড সুজয় সরকারের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল পিজিএম-এর কাছে মেমোরেনডাম সাবমিট করেন। বক্তব্য রাখেন এআইবিডিপিএ-এর পশ্চিমবঙ্গ সার্কেলের সম্পাদক কমরেড আশীষ দাস। তিনি বলেন মোদী সরকার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলি জলের দরে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। সরকার বিএসএনএল-এর জন্য তিনবার আর্থিক প্যাকেজ বরাদ্দ করছে কিন্তু বিএসএনএল-এ 4G চালু হলো না। বিএসএনএল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন-এর সাথে আলোচনা করেই ফ্যাক্টরি সমস্যা সমাধান করতে হবে। তিনি আরও বলেন নিয়মিত কর্মচারীদের সাথে অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীরাও এই লড়াইয়ের সাথে থাকবে। বক্তব্য রাখেন বিএসএনএল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন পশ্চিমবঙ্গ সার্কেলের সহ সম্পাদক কমরেড মানিক লাল সরকার। তিনি বলেন দেশে একটা স্বেচ্ছাচারী সরকার চলছে। কেবলমাত্র টেলিকম ফ্যাক্টরির কর্মচারীরা আক্রান্ত নন। সারা ভারতবর্ষের শ্রমজীবি মানুষ আজ আক্রান্ত। ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের মাধ্যমে ম্যানেজমেন্ট ও সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে। তিন তিন বার বিএসএনএল-এর জন্য সরকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। লাভ হয়েছে ভিআরএস-এর নামে ৮০ হাজার কর্মচারীকে বাড়ি পাঠানো হয়েছে। নিয়মিত কর্মচারীদের পরিবর্তে SLA প্রথায় কাজ করানো হচ্ছে। তিনি আরও বলেন ফ্যাক্টরির কর্মচারীদের আন্দোলনের সাথে পশ্চিমবঙ্গ সার্কেলের সমস্ত নিয়মিত, অনিয়মিত ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীরা থাকবে। তারপর বক্তব্য রাখেন কমরেড অধীর সেন, আলিপুর ফ্যাক্টরির এআইবিডিপিএ-এর নেতৃত্ব, কমরেড পঙ্কজ সাহা, সহ সম্পাদক এআইবিডিপিএ, পশ্চিমবঙ্গ সার্কেল, কমরেড শৈলেন গাঙ্গুলী, বিএসএনএল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন সিজিএমটি অফিস ডিস্ট্রিক্ট ইউনিয়নের সম্পাদক।
প্রতিনিধি দল পিজিএম সাথে সমস্যাগুলি নিয়ে আলোচনা করেন এবং কমরেড অনিমেষ মিত্র আলোচনার বিষয়গুলি সভাস্থলে ব্যখ্যা করে সভা শেষ করেন।