*যৌথ কনভেনশনে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের ডাক*
সিটিও-র টেলিকম ইনস্টিটিউট হলে আজ (২৯/১০/২৪) বিএসএনএল কো-অর্ডিনেশন কমিটি, পশ্চিমবঙ্গ সার্কেল ও সিটিডি র যৌথ উদ্যোগে একটি কনভেনশনের আয়োজন করা হয়। শুরুতে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমরেড বুদ্ধদেব ভট্টাচাৰ্য এবং পশ্চিমবঙ্গে থেকে নির্বাচিত প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ তথা সিপিআইএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিকে স্মরণ এর মধ্য দিয়ে সভার কাজ শুরু হয়। সভাপতিত্ব করেন কমরেড সঞ্জীব ব্যানার্জী, সার্কেল সভাপতি, এআইবিডিপিএ, সিটিডি ও কমরেড পীযুষ চক্রবর্তী, পেট্রোন এআইবিডিপিএ,পশ্চিমবঙ্গ সার্কেল। কমরেড সঞ্জীব ব্যানার্জী সভাপতির ভাষণে বিএসএনএল কর্মচারীদের উপর শোষণ ও বঞ্চনা কথা তুলে ধরে সভা শুরু করেন। এরপর বক্তব্য রাখেন বিএসএনএল পশ্চিমবঙ্গ সার্কলের প্রাদেশিক সম্পাদক কমরেড সুজয় সরকার। তিনি তার বক্তব্যে বিএসএনএল পরিষেবা উন্নত করার জন্য কতৃপক্ষের উদাসীনতার তীব্র নিন্দা করেন। কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে তৈরী করা এনএমপি-র ক্ষতিকর দিকগুলি ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন যে, এনএমপি হলো সরকারি সম্পত্তিকে পুঁজিপতিদের হাতে কম দামে তুলে দেওয়ার নামান্তর ছাড়া আর কিছুই নয়। আর এই কাজে কেন্দ্রীয় সরকার তার পুঁজিপতি বন্ধুদের সাহায্য করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ,তা যতই দেশের জনগনের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়েই হোক না কেন। তিনি আরো বলেন, বিএসএনএল এ ৮০ হাজার কর্মচারী ও আধিকারিকদের ভিআরএস এর মাধ্যমে কর্মচুত করা হয়েছে, যা কিনা এই সংস্থা কে দুর্বল করার অন্যতম ষড়যন্ত্র। ভিআরএস এর প্রস্তাব বিএসএনএল কর্মচারীরা মেনে নেবে না। তার জন্য তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার ডাক দেন তিনি। এরপর বক্তব্য রাখেন কলকাতা টেলিফোনস এর সার্কেল সম্পাদক কমরেড শঙ্কর কেশর নেপাল। তিনি কর্মচারীদের আজকের কনভেনশন এর গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন। এরপর বক্তব্য রাখেন কলকাতা টেলিফোনস এর সার্কেল সভাপতি কমরেড শিশির রায়। তিনি বিএসএনএল কো- অর্ডিনেশন কে শক্তিশালী করতে বিএসএনএল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন কে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান। তিনি আরো জানান, বিএসএনএল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন হলো বিএসএনএল কো- অর্ডিনেশন কমিটির চালিকাশক্তি। কাজেই বাকি দুই সংগঠনকে একসাথে বিএসএনএল এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের নেতৃত্বে যৌথ আন্দোলনের গড়ে তোলার আহ্বান জানান । এরপর বক্তব্য রাখেন বিএসএনএল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন-এর সর্বভারতীয় সভাপতি কমরেড অনিমেষ মিত্র। তিনি প্রথমেই তৃতীয় চুক্তি নিয়ে কতৃপক্ষের নেতিবাচক ভূমিকার তীব্র সমালোচনো করেন। তিনি আরো বলেন যে ম্যানেজমেন্ট ইউনিয়নগুলির মধ্যে থেকে বিএসএনএল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন কে বিচ্ছিন্ন করে কর্মচারী আন্দোলন কে দুর্বল করার পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। ইতিমধ্যেই অফিসারদের তিনটি এসোসিয়েশনকে ভীতিপ্রদর্শনের মাধ্যমে একত্রিত করে বিএমএস-এর অনুমোদিত ও পরিচালিত এসোসিয়েশনে রুপান্তর করার প্রক্রিয়া রাষ্ট্রশক্তি শুরু করেছে। ফলে বিএসএনএলের একটি মাত্র নতুন অফিসার এসোসিয়েশনের জন্ম হবে। নন-এক্সেকিউটিভদের তৃতীয় বেতন চুক্তি নিয়ে ম্যানেজমেন্টের বিমাতৃসুলভ আচরণের বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেন। তিনি আরো বলেন যে বেতন পরিকাঠামোতে আধিকারিক ও কর্মচারীদের মধ্যে বিস্তর ফারাক ইউনিয়ন কোনোভাবেই মেনে নেবে না। ক্যাজুয়াল দের বকেয়া ডি এ নিয়ে আদেশানেমা জারি না হওয়া ও কন্ট্রাক ওয়ার্কারদের ইপিএফ / ইএসআই জমা না হওয়া সংক্রান্ত সমস্যা, দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া বেতন সম্বন্ধে ম্যানেজমেন্ট এর অপদার্থতা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এমতাবস্থায় আগামী ২৭শে নভেম্বর ২০২৪, সারা রাজ্যজুড়ে সর্বস্তরে ধরনা কর্মসূচি সফল করতে এই সময়কালে লাগাতার প্রচারের আহ্বান জানিয়ে বক্তব্য শেষ করেন। এরপর সভাপতিমণ্ডলীর পক্ষ থেকে সভার সমাপ্তি ঘোষনা করা হয়।